আগুনফুলের ঘ্রাণ

View cart “ঈশিতার অন্ধকার শুয়ে আছে” has been added to your cart.

৳ 125.00

সেহাঙ্গল বিপ্লব কবিতা লিখেছেন ১৯৯৭ সাল থেকে। প্রায় ২০ বছর- কম সময় নয়, কিন্তু এর মধ্যে এক মলাটে ধরা দেননি তিনি। পত্রপত্রিকায় যত না প্রকাশের উদ্যোগ, তার চেয়ে বেশি ছিল কবিতার নীরবচর্চা। নিভৃতচারী এই কবির কাব্যগ্রন্থ ‘আগুনফুলের ঘ্রাণ’ প্রকাশিত হচ্ছে ২০১৭ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। এই বিলম্ব একদিক থেকে ভালোই হয়েছে বলা যায়। যথার্থ মান্যসময়ে নিজেকে প্রস্তুত করে মলাটবদ্ধ হয়েছেন এই তরুণ কবি। সেই প্রস্তুতির ছাপ রয়েছে গ্রন্থিত কবিতাগুচ্ছের অনেক পঙক্তিতে। কবিতার ভাষা ও আঙ্গিক প্রকরণে বিপ্লব যে সচেতন, তা এই কবিতার পাণ্ডুলিপি পড়তে পড়তে মনে হয়েছে। যে সময় তরণদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ কবিতাকে জটিল-কঠিন বাক-বিন্যাসে প্রায় অবোধ্য করে তুলছেন, ছন্দপ্রকরণ জানার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন না, সে সময় একজন তরুণ কবি যখন প্রাঞ্জল ভাষায় হৃদয়গ্রাহী বাকচিত্র নির্মাণ করেন, তার তারিফ না করে পারা যায়? বিপ্লবের কবিতা পড়তে পড়তে এই কথাগুলোই মনকে নাড়া দিয়েছে। বিপ্লব তারুণ্য মানেন শিকড়বিচ্ছিন্নতায় বিশ্বাসী নন। সে কারণে তার কবিতায় পূর্বসূরীদের ঐতিহ্য এবং সমকালীন আধুনিকতার চমৎকাম সমন্বয় দৃশ্যমান। কবিতাগুলো বিষয় বৈচিত্র্যেও প্রশংসার দাবি রাখে। বিষয় হিসেবে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাই সব কবির মূলধন। বিপ্লবও ব্যতিক্রম নন এক্ষেত্রে। তবে সমকালীন দুঃখ-হতাশ, আনন্দ-বেদনার চিত্রায়ন তাতে এতটুকু বিঘ্নিত হয়নি। বরং ব্যক্তিগত অনুভূতির আশ্রয়ে বিপ্লব চিত্রিত করেছেন সমকালীন সমাজ-রাজনীতি আর মানবচরিত্রর জটিল সব ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া। প্রেমের কবিতায় অনুরাগের চেয়ে বিপ্লব বিরহ-বিধুর অভিজ্ঞতারই রূপায়ণ করেন, যা সংবেদনশীল মানুষমাত্রেই ছুঁয়ে যাবে। একজন কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থের যদি ১০টি কবিতাও পাঠকের হৃদয় ছুঁতে পারে- তা খুব কম বড় অর্জন নয়,  সেহাঙ্গল বিপ্লব সেটুকু  অর্জনে সক্ষম, সে বিষয়ে আমার কোনো দ্বিধা নেই।