সাতচল্লিশের অখণ্ড বাংলা আন্দোলন: পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ

View cart “ভাষা মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু” has been added to your cart.

৳ 350.00

বঙ্গভঙ্গ ১৯০৫ এবং ১৯৪৭। মাঝখনে ৪২ বছর। এই বিয়াল্লিশ বছরে বাংলার জাতীয়তার চিন্তায় বিশাল পরিবর্তন ঘটেছিল তাতে বাঙালি জাতির শেকড়ে টান লেগেছিল। কিন্তু পরিবর্তনটা কি? ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ ছিল ইংরেজদের ষড়যন্ত্র। বাঙালি জাতীয়তায় হিন্দু-মুসলমান ধর্মীয় প্রশ্নে সাম্প্রদায়িকতার সৃষ্টি করা— গবেষকদের বিশ্লেষণে এটাই মূলকথা সাদামাটা ভাষায়। ব্রিটিশ ভারতের, বিশেষ করে ব্রিটিশ বাংলার রাজনৈতিক কিংবা সামাজিক ইতিহাসে ভর করে আছে সাম্প্রদায়িকতা। মার্ক্সিস্টরা সাম্প্রদায়িকতার মূলে অর্থনৈতিক- বৈষম্য, শ্রেনীবৈষম্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে থাকেন। তবে সাম্প্রদায়িকতা যে একান্তই পরিকল্পনার আওতায়ই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা অস্বীকার করার উপায় নেই। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে কিছুসংখ্যক বিবেকবান বিদগ্ধ শিক্ষিত মুসলমান ছিলেন না তা নয়। তারাও মনে করতেন বাংলা দেশটাকে ভাগ করার চূড়ান্ত অর্থ দাঁড়ায় বাঙালি জাতিকে ধর্মের নামে দু’ভাগ করা। বঙ্গভঙ্গ প্রতিরোধের আন্দোলন থেকে জন্ম নিয়েছিল স্বদেশি আন্দোলন। মাতৃভূমিকে দুটুকরো করা হয়েছে বলে সেদিনকার আক্ষেপের পেছনে কি কোনো ‍উদ্দেশ্য ছিল? আমাদের গবেষকগণ এ প্রশ্নের জবাব খোঁজেননি। এবং সহজলভ্য তথ্য প্রমাণাদি দিয়ে।৪৭-এর বঙ্গভঙ্গের কারণ প্রতিষ্ঠিত করেননি। তবে ৪৭-এ যে হিন্দুরাই এবং একমাত্র হিন্দুরাই বঙ্গভঙ্গ করেছিলেন তাতে কোনো সন্দেহ আজ আর নেই। এটা পশ্চিমবঙ্গ থেকেই প্রকাশিত এবং প্রচারিত তথ্যাবলি থেকে প্রমাণিত হয়ে আছে। বঙ্গীয় মুসলিম লীগ এবং নিখিল ভারত মুসলিম লীগ বাংলা ভাগ চায়নি। শেষ দিন পর্যন্ত চায়নি তবুও বাধ্য হয়ে মেনে নিয়েছিল, নইলে পাকিস্তান জন্মলাভ করতে বিঘ্নের সৃষ্টি হতো এই আশঙ্কয়। কিন্তু মেনে নেওয়ার পরই কেন মুসলিম লীগের কাছে অখণ্ড বাংলা একটা ভয়ংকর অস্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়ে গেল? রাজনীতিকরা বিশেষ একটা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে না হয় অবিভক্ত বাংলা চিন্তার বিষয় থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিলেন কিন্তু কেনই বা বুদ্ধিজীবী গবেষকগণও বিষয়টি ধামাচাপা দিলেন অবলীলা ক্রমে। এই সব প্রশ্নের জবাব খোঁজার পাশাপাশি এ-গ্রন্থে আরও তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক স্তরকে স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে ১৯০৫ থেকে ১৯৪৭ সালের একটি স্তর যেখানে জাতিসত্তার ছিন্নবিচ্ছিন্ন হওয়ার কথাগুলো আছে। যা ইতঃপূর্বে অন্য কোনো গ্রন্থে বিধৃত হয়নি। প্রাসঙ্গিক বিষয়ে লেখকের নতুন মূল্যায়ন পাঠকের তৃষ্ণা মেটাবে অনেকখানি।