উপনিবেশবাদ ও উত্তর ঔপনিবেশিক পাঠ

৳ 520.00

উপনিবেশ স্থাপনকারী দেশগুলোর জনগোষ্ঠী সভ্য, সংস্কৃতবান ও উন্নত এর উপনিবেশিতরা অসভ্য, বর্বর ও সংস্কৃতিহীন; উপনিবেশিতদের সভ্য এর সংস্কৃতবান করার জন্যই উপনিবেশ স্থাপন করা হয়েছে পশ্চিমা দার্শনিক-চিন্তাকদের মতে ইতিহাসের মূল স্রোতে ঢেকার জন্য অন্যদের উপনিবেশিত থাকার দরকার ছিল। এভাবে পশ্চিম চিন্তক-দার্শনিকরা সাম্রাজ্যবাদের সহযোগী হয়ে এমন একটি চেতনা দাঁড় করিয়েছে যা উপনিবেশিতদের খাটো করে, তাদের মনোজগতে হীনম্মন্যতার বোধ সৃষ্টি করে। উপনিবেশবাদের প্ররোচিত হয়েই তারা এরূপ বুদ্ধিবৃত্তিক সন্ত্রাস চালিয়েছে। উপরন্তু এই আধিপত্য বিস্তার ও স্থায়ী করার লক্ষ্যে পশ্চিমারা অধিগত দেশসমূহে পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত একটি শ্রেণী তৈরি করেছে, যারা ঔপনিবেশিক শিক্ষা এবং অধিপত্যের মহত্ত্ব প্রচার করে। এমনকি উত্তর-ঐপনিবেশিত রাষ্ট্রের অনেক মেধাভী চিন্তক দাঁড়িয়েছেন এ ডিসকোর্সের বিরুদ্ধে। এই এককেন্দ্রিক প্রতারণাপূর্ণ উপস্থাপনকে বিরোধিতা করে যাচ্ছেন তাঁরা। একই সঙ্গে প্রাক্তন উপনিবেশসমূহে উপনিবেশবাদ-সৃষ্টি মন্দ প্রভাব ও বিকৃতি শোধনেও তার তৎপর। এ সংকলনে এইসব উত্তর-ওপনিবেশক চিন্তকদের লেখাই সংকলিত হয়েছে যারা পশ্চিমা আধিপত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন, বলেছেন নিজেদের সমাজ ও সংস্কৃতির কথা, অস্তিত্বসংলগ্ন বাস্তবতার কথা; আর উম্মোচন করেছেন উপনিবেশবাদের কৌশল ও উদ্দেশ্য। সর্বগ্রাসী এই অশুভ শক্তি উপনিবেশিত মানুষের দেহ-মনকে এমনভাবে অধিগত করে আছে যে, তার পক্ষে পুনরায় স্বরূপে প্রত্যাবর্তন রীতিমতো দুরূহ ব্যাপার। এ থেকে উত্তরণ সোজা নয়, দরকার বৈপ্লবিক মানসিক দৃঢ়তা। উপনিবেশবাদী ডিসকোর্সের বিরুদ্ধে জ্ঞানবুদ্ধি নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হয়। দীর্ঘ-জটিল সেই সংগ্রামের অংশ হিশাবে এই গ্রন্থটির আত্মপ্রকাশ। বাংলাদেশ তথা বাংলা ভাষার এটি এক অনন্য উদ্যোগ।