একটি খুনের স্বপ্ন

৳ 250.00

খুনের বাণীটি পাই আমি স্বপ্নে। প্রথম আমি বিব্রত বোধ করি, ভয়ও পাই, যেন কেউ আমার ওপর এক অসম্ভব দায়িত্ব অর্পণ করেছে, আমাকে বাণী দিয়েছে, তার বাণী আমাকে পালন করতে হবে। আমি কি বাণী থেকে পালিয়ে যাব? কিন্তু আমার রক্ত প্রথম পালাতে চায়, তারপর পালাতে চায় না। অনেক রাত, রাতের পর রাত, স্বপ্নহীন থাকার পর- অন্তত স্বপ্নগুলো আমার মনে পড়েনি, ওগুলো হয়তো দ্রুত চলচ্চিত্রের মতো আমার মগজের পর্দায় ঝিলিক দিয়ে চলে গেছে-সেই আশ্চর্যজনক রাতে খুব এক আশ্চর্যজনক অপরূপ সুন্দর স্বপ্ন দেখেছিলাম বলে আবছা মনে পড়ে বা আমার মনে পড়ে না; স্বপ্নটি ভেঙে গেলে আমি খুন করার আবেগ বোধ করি, আমার মনে হয় স্বপ্নে আমি বাণী পেয়েছি। আমি তখন এসএম হলে থাকতাম, পুরভবনের দোতলার উত্তর দিকের কক্ষে; আমি আর চেয়ারে চোখ বুজে বসে থাকতে পারি না, সিগারেট ধরিয়ে বারান্দায় আসি, রেলিংয়ের ওপর ঝুঁকে দাঁড়িয়ে বাগানের ঝাউ আর পাতাবাহার গাছগুলোর দিকে তাকিয়ে স্বপ্ন, খুন ও সিগারেটের ধোঁয়াকে জড়িয়ে ফেলি; ঠিক কাকে খুন করব, তা বুঝতে পারি না। স্বপ্নের বাণী সব সময়ই অস্পষ্ট বহু অর্থবোধক হয়, ঠিক মতো জানায় না কী করতে হবে; স্বপ্ন নিয়ে, অলৌকিক বাণী নিয়ে, এটাই চিরদিনের সমস্যা- একটা অর্থ বুঝতে গিয়ে আরেকটা অর্থ বুঝে ফেলে মানুষ; তবে আমার রক্ত ফিসফিস করতে থাকে, খুন করো, একটা খুন করো, নইলে তুমি বাঁচবে না। ১৯৬০-এর দশকের এক যুবকের প্রেমের মর্মান্তিক যন্ত্রণার অসামান্য উপন্যাস হুমায়ুন আজাদের একটি খুনের স্বপ্ন।