ক্ষুদিরাম থেকে কর্নেল তাহের

৳ 900.00

আপনাদের সামনে দণ্ডায়মান এই মানুষটি, যে মানুষটি আদালতে অভিযুক্ত সেই মানুষ এই দেশের তা ছিনিয়ে আনার জন্য রক্ত ,শরীরের ঘাম ঝরিয়েছিল । এমনকি নিজের জীবন পর্যন্ত পণ করেছিল । এটা আজ ইতিহাসের অধ্যায় । একদিন সেই মানুষটির কর্মকাণ্ড আর কীর্তির মূল্যায়ন ইতিহাস অবশ্যই করবে। আমার সকল কর্মে,সমস্ত চিন্তায় আর স্বপ্নে এই দেশের কথা যেভাবে অনুভব করছি তা  এখন বোঝা সম্ভব নয়। ভাগ্যের কী নির্মম প্রিহাস !এই দেশের সঙ্গে আমি রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ। আর এরা কীভাবে  অস্বীকার করে এই দেশের অস্তিত্বে  আমি মিশে নেই। যে সরকারকে আমি বসিয়েছি, যে ব্যক্তিটিকে আমিই নতুন জীবন দান করেছি, তারাই আজ এই ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে আমার সামনে এসে হাজির হয়েছে। এদের ধৃষ্টতা এত বড়ো যে তারা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো আরো অনেক বানানো অভিযোগ নিয়ে  আমার বিরুদ্ধে বিচারের ব্যবস্থা করেছ। আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে তার সবই বিদ্বেষপ্রসূত, ভিত্তিহীন, ষড়যন্ত্রমূলক। সর্ম্পণ মিথ্যা। আমি নিরপরাধ। এই ট্রাইব্যুনালের রেকর্ডকৃত দলিলপত্রেই দেখা যায় যে উনিশশ পঁচাত্তর- এর ৬ ও ৭ নভেম্বর ঢাকা সেনানিবাসে আমার নেতৃত্বে সিপাহি অভ্যুত্থান হয়। সেদিন এভাবেই একদল বিভ্রান্তকারীর ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র নির্মূল করা হয়। মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান আর দেশের সার্বভৌমত্বও থাকে অটুট। এই যদি হয় দেশদ্রোহিতার অর্থ তাহলে হ্যাঁ, আমি দোষী। আমার দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয় এনেছি। এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছি। সেনাবাহিনী প্রধানকে বন্দি অবস্থা থেকে মুক্ত করেছি। সর্বোপরি বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্নে মানুষের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছি। সেই দোষে আমি দোষী। (লখাটি গোপন আদালতে কর্নেল তাহেরের জবানবন্দি থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে নেওয়)