গণতান্ত্রিক উত্তরণ স্থানীয় শাসন ও দারিদ্র্য দূরীকরণ

৳ 800.00

গণতান্ত্রিক শাসন কায়েম আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক শাসনের সূচনা হয়। কিন্তু নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জনগণের ভোটের মাধ্যমে প্রাপ্ত ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারেন। তাই নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ক্ষমতার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা আবশ্যক। আধুনিক রাষ্ট্রে একটি যথার্থ আইনি কাঠামো ও কতগুলো প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির মাধ্যমে তা করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হতে পারে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর বাইরের (non-state)। রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম ও সংগঠিত নাগরিক সমাজ রাষ্ট্রীয় কাঠামের বাইরির গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। আইনসভা, বিচার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, নির্বাচন কমিশন, মহা হিসাব নিরীক্ষক, সরকারি কর্মকমিশন, ন্যায়পাল ইত্যাদি সাংবিধানিক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, তথ্য কমিশন ইত্যাদির মতো সংবিধিবদ্ধ সংস্থাই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের উত্তরণ ঘটলেও, যথার্থ আইনি কাঠামোর অভাবে এবং এ সকল প্রতিষ্ঠান কার্যকর না হলে, গণতন্ত্রের ভিত সুদৃঢ় হয় না এবং তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে না। আর সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রূপ লাভ করে না। আর সত্যিকারের গণতান্ত্রিক শাসন কায়েম, গণতান্ত্রিক দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠিত এবং একটি বলিষ্ঠ বিকেন্দ্রীকরণ কর্মসূচির আওতায় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী হলেই, ক্ষুধা-দারিদ্র্যের মতো জটিল সমস্যার সমাধান সম্ভব। তবে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে আরও প্রয়োজন আমাদের প্রচলিত উন্নয়ন কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্রীয় সকল সম্পদ ও সুযোগে তাদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তাদের প্রতি সকল বৈষস ও বঞ্চনার অবসান ঘটে। আর এ সকল পরিবর্তনের জন্য আবশ্যক একটি বলিষ্ঠ সংস্কার কর্মসূচি এবং ‘লোকাল ডেমোক্রেসি’ বা স্থানীয় গণতান্ত্রিক কাঠামোভিত্তিক ও নারীদের প্রতি অগ্রাধিকারমূলক একটি গণকেন্দ্রিক উন্নয়ন কৌশল। এ ধারণাগুলোই বর্তমান গ্রন্থের বিষয়বস্তু।