চিবুকে নীল জোনাকি

View cart “সব ওষুধ নিরাপদ নয়” has been added to your cart.
View cart “চিরঞ্জীব মুজিব” has been added to your cart.
View cart “বিস্মরণের চাবুক” has been added to your cart.

৳ 200.00

নব্বই-এর দশকে ‘লোভ দেখালেও জুঁই-চন্দন’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে কবি সাবিনা ইয়াসমিনের আবির্ভাব। এরপর তিনি তাঁর আবেগের সততা, শব্দবুননের স্বকীয়তা ও বক্তব্যের ঋজুতায় সাহিত্যাঙ্গনে হেঁটে এসেছেন অনেকটা পথ। নব্বই দশকের অন্যতম কবি সাবিনা ইয়াসমিন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কন্যা সাবিনার কবিতায় দেশপ্রেম অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষ, এদেশের প্রকৃতি তাঁতে মুগ্ধ করে। তিনি মায়াহরিণের খুরে ওড়ানো ক্যানভাসে ফুটে উঠতে দেখেন বাংলা মায়ের রূপ। ‘সূর্যমুখীর বিস্ফোরণ, পরিত্যক্ত রেললাইন/কবুতরের বাসায় ডিম, কাঠবাদাম বৃক্ষের গায়ে/বিমূর্ত চিত্রকলা’ অথবা ‘কিশোরীর চোখে/ আম্রমঞ্জরীর কম্পন, নদীর জলের অতল/ঢেউ এর পিঠে ঢেউ/ চাঁদ আর চকোরীর গান তাঁকে স্বপ্নাতুর করে তোলে। তাঁর স্বপ্নের বাংলাদেশ- ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে রাঙা। সেই বাংলাদেশের হোলি আর্টিজান কিংবা শোলাকিয়ায় শকুনের হিংস্র নারকীয় উল্লাস তাঁকে ব্যথিত করে। এভাবেই তাঁর কবিতা স্বদেশপ্রেম ও সমসাময়িক ঘটনাবলির দালিলিক রূপ পায়।

এছাড়া ভালোবাসা, প্রেম বা বিরহ তাঁর কবিতায় উঠে আসে সাবলীল বর্ণনায়। সুনির্বাচিত শব্দশৈলীতে কবি বলেন, ‘আমি আমার তৃষ্ণভর্তি ক্যানু নিয়ে/ জোয়ারে জোয়ারে ভাসবো/ খুঁজে নেবো নোঙরবিহীন মোহনার প্রসার।’ একইসাথে তিনি আশাবাদী হন শাশ্বত ভালোবাসা একদিন ঠিক তার ঠিকানা খুঁজে পাবে, ‘জানি একদিন আষাঢ়ের ঢলের সাথে/ পূর্ণিমা নামবে আমার পিপাসার ডোঙায়/ সেদিন চাঁদও শোকার্ত হবে/ আঙুল ছোঁয়ালে এই পবিত্র চিবুকে।’

কবি মনে করেন, ‘একটা নীল জোনাকি ভালোবেসে/ বুকের ওপর চেপে বসা পাহাড়গুলোকেও/হীরাভস্মের মতো হালকা মনে হবে/তারপর কোন এক প্রগাঢ় সন্ধ্যায়/গয়নার নৌকো দুলবে/ঝাঁপতালে, অগস্ত্যযাত্রায়।’ সাবিনার কবিতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তিনি গভীর যত্ন ও মমতায় নির্মাণ করেন শব্দাবলি। সংহত ও পরিশীলিত আবেগ, বর্ণিল উপমা ও উৎপ্রেক্ষার ব্যবহার তাঁর কবিতাকে স্বতন্ত্র করে তোলে।