তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এক অশনিসংকেত

৳ 320.00

বইয়ের লেখাগুলোয় বিশেষ করে জাতীয় রাজনীতি ও বিচার বিভাগের নানা বিষয় লেখকের নিজস্ব অন্তর্দৃষ্টি ও ধ্যান- ধারণা ফুটে উঠেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তাধারার ফসল ছিল না। এবং এই ব্যবস্থা জিইয়ে রাখার ফলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকট হয়ে ফুটে ওঠে। সার্বিকভাবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পরিবর্তে অস্থিতিশীলতা, অনাস্থা, অবিশ্বাস যা কিনা মূলগতভাবে দুই বড় দলের মতাদর্শগত বিভেদ আমাদের পর্যুদস্ত করেছে। মিজানুর রহমান খান যুক্তি দেন যে, গণতন্ত্রকে রূপ দিতে হলে সুপ্রিম কোর্ট, নির্বাচন কমিশন, মহা হিসাবনিরীক্ষক, দুর্নীতি দমন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন এবং সর্বোপরি স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সত্যিকার অর্থেই স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। কিন্তু নির্বাচিত সরকার কিছুতেই আমাদের লোকদের বাইরে বেরোতে পারে না। তাঁরা তাঁদের নির্বাচনি ইশতাহারে প্রতিদিনের বক্তৃতা-বিবৃতিতে যদিও বলে থাকে, কেবল মেধা ও যোগ্যতাই হবে ব্যক্তি বাছাইয়ের মাপকাঠি। কিন্তু বাস্তবে তাঁরা তা খুব কমই পারেন বা একেবারেই পারেন না। জনপ্রশাসনও শুরু হয় লোকদের পুনর্বাসন। পরিহাস হলো, এখানেও একটি মস্ত ফাঁকি থাকে। আর তা হলো, অনুসারীদের মধ্যে সবচেয়ে মেধাবী লোকটি প্রায়শ উপেক্ষিত হন। বেছে নেয়া হয় কম যোগ্যতাসম্পন্নকে যিনি তাঁর ঘাটতি পূরণ করেন মোসাহেবি ও তদবির দিয়ে। লেখক তার বইয়ে এসবের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, নির্বাচিত সরকারগুলো গণতান্ত্রিক দাবি করলেও তারা অনেক ক্ষেত্রেই পরিবারতন্ত্র বা অভিজাততন্ত্রের মধ্যেই ঘুরপাক খায়। রাজতন্ত্রে যে ধরনের লক্ষণ ও সমস্যা দেখা দেয় তা বাংলাদেশ শাসনেও কখনো স্পষ্ট হয়ে ওঠে।