নির্বাচিত প্রবন্ধ

View cart “বিপন্ন গণতন্ত্র, লাঞ্ছিত মানবতা” has been added to your cart.
View cart “মরণচাঁদের রবীন্দ্রনাথ” has been added to your cart.
View cart “কবর থেকে বলছি” has been added to your cart.
View cart “সুখের সমাজে শান্তির সন্ধান” has been added to your cart.

৳ 700.00

অসামান্য তীব্র বৈশিষ্ট্যে পরিবৃত তিনি; তিনি অনন্য ডক্টর আহমদ শরীফ । দাঁকে বলা হয় পণ্ডিত ও বয়স্ক বিদ্রোহী । বহু শাস্ত্র তাঁর আয়ত্তে ; এবং তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন তিনি তাঁর গ্রন্থগুচ্ছে । প্রতিবাদী তিনি । তিনি বিদ্রোহী-সবরকম প্রথাসংস্কার শৃঙ্খল ধরে খুব জোরে তিনি টান দিচ্ছেন কয়েক দশক ধরে । এমন আর কাউকে পাওয়া যাবে না তরুণ বা প্রৌঢ় বা বৃদ্ধদের মধ্যে । ভাববাদ-মানবতাবাদ-মার্ক্সবাদের এক বিক্ষুব্ধ মিশ্রণ ড. আহমদ শরীফ ; যেমন জ্ঞানী, তেমনি তীব্র ও উত্তেজিত ও উত্তেজক । তাঁর পাণ্ডিত্য, মধ্যযুগের বাঙলা সাহিত্য ও সমাজ সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান, তাঁকে শ্রদ্ধেয় করে তুলেছে দেশে-বিদেশে । তাঁর মুক্তবুদ্ধি ও প্রথাবিরোধিতা আকৃষ্ট করেছে । প্রগতিশীলদের । তাঁর প্রতিবাদ বিদ্রোহে যখন উদ্দীপ্ত উল্লসিত হয় এক গোত্র, তখন আরেক গোত্র ত্রাসে ক্ষোভে সংহত হয়ে তাঁকেই শনাক্ত করে এক নম্বর শত্রু হিসেবে । আমাদের সমাজের প্রধান ব্যক্তিদের মধ্যে ড. আহমদ শরীফই সম্ভবত একমাত্র পুরুষ, যিনি সকলের কাছে প্রিয় হওয়ার দুর্বলতাকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন । দ্রোহী সমাজ পরিবতনকামীদের কাছে তাঁর পুস্তকরাশির জনপ্রিয়তা ঈষণীয় । বিবেক, সততা, মুক্তবুদ্ধি, সংস্কারহীনতা দিয়ে নিজেকে তিনি প্রমাণ করেছেন প্রগতিশীলতার পক্ষের একজন হিসেবে । প্রচণ্ড ব্যক্তিস্বাতন্ত্র বাদী তিনি । তাঁর কথা রুগ্ন বর্তমানের বিবেকী আত্মার আর্তনাদ। ড. শরীফ প্রথম জীবনে কবিতা লিখেছেন, গল্প লিখেছেন কয়েকটি । এমনকি সরোজিনী নাইডুর কবিতাও অনুবাদ করেছিলেন ।  কিন্তু  অবিলম্বেই নিজের পথ চিনতে পারেন, এবং মন দেন গবেষণায় ও প্রবন্ধ রচনায় । পঞ্চাশের দশক থেকে শুরু করে বর্তমান সময়কাল পর্যন্ত সমাজ-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ে প্রচুর প্রবন্ধ লিখেছেন তিনি । তাঁর প্রথম গ্রন্থ বিচিত চিন্তা প্রকাশ পায় ১৯৬৮-তে । তাঁর অসামান্য কীর্তি বাঙালি ও বাঙলঅ সাহিত্য । ড. শরীফ ধ্যানমগ্ন আত্মনিমগ্ন সাধক নন । তিনি জীবন ও বিশ্বকে উপলব্ধি ও ব্যাখ্যার সাথে সাথে রূপান্তরিত করতে চান । তাঁর লক্ষ্য সমাজতন্ত্র । তাঁর বিভিন্ন গ্রন্থে প্রবন্ধে নানাভাবে তিনি পরিত্যাগ করেছেন প্রচলিত সমাজব্যবস্থা, বিশ্বাস ও সংস্কার, এবং কামনা প্রকাশ করেছেন সমাজতান্ত্রিক জীবনব্যবস্থার জন্যে । তিনি একটি প্রতিপক্ষ দেখতে পান চারদিকে । যাকে দমন করাই তাঁর লক্ষ্য । তিনি কাম্য সমাজের যে ছবি আঁকেন, সেখানে ‘শিশুর হাসি, নারীর রূপ, ফুলের রূপ-রস-গন্ধ, কবিতার মাধুর্য’ জীবনকে করে তাৎপর্যমণ্ডিত । যেহেতু তিনি রূপান্তরিত করতে চান সমাজ রাষ্ট্রকে, তাই বাঙলাদেশের জীবন ও রাজনীতি তার প্রাত্যহিক পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের বিষয় । তবে পর্যবেক্ষণ  ও প্রচার করেন একই সাথে দৃঢ় প্রত্যয়ে, দৃপ্ত ঢঙে । তাঁর সুনির্বাচিত এই প্রবন্ধ গ্রন্থ বাঙালি পাঠকমাত্রের কাছে সংগ্রহে থাকাই একটি অহংকার ।