পরমানুষ

৳ 60.00

ধানীখোলার হাটে লুঙ্গি বেচতে গিয়ে নটী কইতরীর সাথে আলাপ আরমানের। বিন্দার পুল পেরিয়ে ঘন বাঁশঝাড়ের আড়ালে মেয়েটির বাস। বয়সে কাঁচা ছেলেটি। নায়িকাও নবীনা। কথা হয় দুজনায়। এখানে পুরুষ আসে সম্ভোগেরই কারণ। কিন্তু আরমান ভারি সরল আর বেশ আলাদা বিশোর। মেয়েটি তা বুঝতে পারে। বলে, আগে জানলে তোমারে আমি বিয়া করতাম। সেই রেশ ধরে দ্বিতীয়বারে কইতরীর ঘরে আরমানের প্রবেশ। কিন্তু ঘটনা তীব্র মোড় নেয় হঠাৎ। মেয়েটির কণ্ঠে তখন ভিন্ন সুর। বলে, নডী বাড়ি আইয়ে যারা হেরা আবার ভালা অয় কবে? শেষ মুহূর্তে মেয়েটি পাইন্না খুনির হাতে নিহত হয়। বিস্ময়ের চূড়ান্ত সীমায় দাঁড়িয়ে নায়ক আবিস্কার করে, আকাশে আগল আগল চাঁদ জেগে রয়। মালিক স্বয়ং ঈশ্বর। আর পাপ-পুণ্যি বিচারের তিনিই বিধাতা। কিন্তু আরমান হাসপাতালে দরজা ডিঙিয়ে পুলিশ এবং ডাক্তারের ভিড়ে মৃতার মুখ দেখতে পায় না। তখন তার প্রশ্ন জাগে, নটী কি অতই পরমানুষ পৃথিবীতে? শুধু নাম গল্পে নয়, গ্রন্থভুক্ত সাতটি লেখায় সাতটি নটীকে নিয়ে ভিন্ন জিজ্ঞাসা আজ গল্পকারের সামনে। বেশ্যা মানেই দেহ দান নয়-বুলবুল চৌধুরী ওই মেয়েদের আড়ালে আড়ালে গড়েন মানুষ-মানুষির তাবৎ সম্পর্কের দ্যোতনা। ঠিক যে, আজকের গ্রামে গ্রামে লেগেছে বদলের নতুন পালা। তবু গ্রাম্য জীবনে যে আবহমানতা বজায় আছে তাকে ঘিরেই লেখালেখিতে বুলবুল চৌধুরী সবচেয়ে বেশি বিস্ময়, প্রতিবাদ এবং অবাক নতুনত্বের দাগ কাটা। এদিক থেকে আমাদের ছোট গল্পে তাঁর জীবনবোধ ও শিল্পের বিচিত্র অভিজ্ঞতা লেখককে দিয়েছে স্বাতন্ত্র্যের বিশেষ অধিকার। ‘পরমানুষের’ প্রধান বৈশিষ্ট্য : গ্রন্থনা পুরোপুরি নটীদের ঘিরে, শেষ পর্যন্ত সবকটি লেখা মিলে আমাদের আর একজীবনের এ যেন নতুনতর কোন ধারাবাহিক উপাখ্যান।