প্রতিক্রিয়াশীলতার দীর্ঘ ছায়ার নিচে

৳ 200.00

বাঙালি মুসলমান প্রগতির দিকে কিছু পথ হাঁটার পর ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, আবার ফিরে যাচ্ছে পেছন ও প্রতিক্রিয়াশীলতার দিকে; আমার ভয় হচ্ছে তাঁদের বিশশতকের শেষ দশকটি হয়ে উঠবে আরো আরো নানা রকমের রোগ। সমাজ-রাষ্ট্র যারা চালাচ্ছে ও চালাবে তারা নিজেদের প্রয়োজনেই সৃষ্টি করবে সে-সব, কারণ তা হবে তাঁদের জন্যে সুবিধাজনক। ‘যুগান্তের বা শতকান্তের ক্লান্তি’ ব’লে একটি কথা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলো একসময়, যা দেখা দিয়েছিলো উনিশশতকের শেষ দশকের ইউরোপে; আমাদের এখানে তেমন কোনো ক্লান্তির বদলে হয়তো দেখা দেবে শতকান্তের অন্ধকার বা ব্যাধি, যার লক্ষণ এখন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এগোনোর কথা ছিলো বাঙালি মুসলমানের, এগোনোর চেষ্টাও করেছি; তবে এখন হয়ে উঠছি পেছনমুখো, পেছনই হয়ে উঠেছে আবার গন্তব্য। বিভিন্ন বিষয়ে নানা প্রশ্ন তোলা যেতো দু-দশক আগেও, তাতে কোনো সাহসের দরকার পড়তো না; এখন সে-সব প্রশ্ন তোলা বড়ো রকম সাহসের ব্যাপার ও বিপজ্জনক; অনেক কিছুই দু-এক দশক আগে বাতিল ব’লে গণ্য হয়ে গিয়েছিলো, এখন সে-সব হয়ে উঠছে ভীতিকরভাবে জীবন্ত। জীবন ও রাজনীতি, সাহিত্য ও শিল্পকলা সবই এখন পরিত্যক্ত সমস্ত ব্যাপারের কাছে পরাজিত হচ্ছে; বাঙালি মুসলমান ও মধ্যযুগীয়; প্রতিক্রিয়াশীলতা হয়ে উঠেছে তার জীবনধারণের পদ্ধতি। হুমায়ুন আজাদ কবি, সমালোচক, ভাষাবিজ্ঞানী, প্রাবন্ধিক; বাঙলাদেশের সবচেয়ে প্রথাবিরোধী চিন্তাবিদ। শাণিত গদ্যে তুলে ধরেছেন বাঙলাদেশের সাম্প্রতিক প্রতিক্রিয়াশীলতার রূপ, পথ দেখিয়েছেন প্রগতিশীলতার।