বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক

৳ 80.00

এক আশ্চর্যাভিজ্ঞতা বেড়ে ওঠা মানুষের গল্প বলেছেন তিনি ঋজু, নির্ভিক শব্দাবলিতে; মেদহীন অথচ দ্যূতিময় বাক্যে; বাঙ্ময় ও প্রানোন্মুখ উপস্থাপনায়; উপমাশৈলীর শৈল্পিকতায়; জীবন আর জগতের কেন্দ্রাতিগ দার্শনিকতায় এবং মানবিকতার মানস  সরোবর থেকে আঁজলা ভরে তুলে আনা জলজ এষণায়। তাঁর চরিত্রেরা সময়বোধের বিরুদ্ধে লড়াই করে, জীবন তাদের কাছে কখনো তিতো সম্পর্কের একটা জটলা,  কখনোবা ব্রকেন প্রমিজ। জীবনের শেকড় সন্ধানে যাঁরা উন্মুখ। যাঁদের কেউ একজন খুঁজে পায় শব্দের দুর্বার শক্তি। তাঁর চরিত্রেরা নির্জনতার মধ্যকার ঘুমঘুম কোলাহলকে ছুঁতে চেয়েছেন, যেমনটা ছুঁতে চেয়েছেন গঁগ্যা তাহিতিতে ডি –কুনিগ আমেরিকায় জাহাজ থেকে নেমে। তাঁর চরিত্রেরা যুদ্ধের ভেতর ভোরের আলো ফোটার মতো কদর্য সত্য উপলব্ধি করেন সম্পর্কহীনতার মধ্যে সর্ম্পক তৈরি করেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধোত্তর সামাজিক জীবনের  অস্থিরতা, যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি, যুদ্ধজনিত দূরত্ব, যুদ্ধ ও মৃত্যুর অপ্রতিরোধ্যতার বোধ, যুদ্ধশেষের অর্থহীনতা তুলে এনেছেন তিনি; এসেছে এথনিক ক্লিনসিং। তুলে এনেছেন দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের মর্মবেদনা, প্রশাসনিক জটিলতা,  জনগণের প্রতি রাজনীতিবিদদের পোশাকি প্রেম। রাজনৈতিক রাজত্বের কথা বলেছেন, পেঁয়াজের খোসার মতন প্রতিস্তরের নির্যাতনের কথা বলেছেন, কথা বলেছেন চারপাশের শূন্যতা নিয়ে। অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর বহুদিন বিরতির পর তাঁর নতুন পনেরোটি গল্পের এ-গ্রন্থে প্রচলিত দেশজ ছোটগল্পের সীমানাকে অতিক্রম করার পাশাপাশি বাড়িয়ে দিয়েছেন এ পরিসর; অভিজ্ঞ বংশীবাদকের মতো তুলেছেন আন্তর্জাতিকবোধের সম্মোহনী সুর। প্রতিটি গল্পে প্রাধান্য পেয়েছে পরাধীনতার শ্বেতহংসকে স্পর্শোত্তর আপন করে নেবার দুর্নিবার আকাঙ্ক্ষায় বুকের অতল আর মৃত্তিকার গহিন থেকে উঠে আসে সংগ্রামের শাশ্বত স্লোগান- বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।