মোল্লাপ্রজাতন্ত্রী পবনকুটির

View cart “সহজ বাংলা উচ্চারণ” has been added to your cart.
View cart “বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশের পথে” has been added to your cart.
View cart “তরবারির ছায়াতলে” has been added to your cart.

৳ 130.00

মোল্লাপ্রজাতন্ত্রী পবনকুটির-এর  আখ্যান শুরু হয়ে ইকরহাটি গাঁয়ের ফসলশূন্য মাঠের মধ্যে থেকে। আমরা দেখি, নিষ্ফল মাঠে পড়ে আছে মরা গরু। দেখি আকাশ থেকে ঝাঁক ঝাঁক শকুন নেমে এসে ঘুরপাক খায় তাদের ঘিরে। দিন-দিন শকুনের দাপট বাড়তে থাকে; মরা গরু ছেড়ে শকুনের দল ঝাঁপিয়ে পড়ে মরা মানুষের ওপর। কেননা, কে না জানে- শকুনের দোয়ায় গরু মরে না; যদিও মানুষ মরে।

আখ্যানের এই ইকরহাটি গ্রামকে আমরা দেখতে পাই চোখ মেললেই। কেননা ইমতিয়ার শামীমের এই আখ্যান মূলত আমাদের অসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধের আখ্যান। ইকরহাটি গ্রাম আমাদের স্বপ্ন ভেঙে দেয়, যেমন স্বপ্ন ভাঙে জাহাঙ্গীরের, স্বপ্নের মতো আর এক দুঃস্বপ্ন ডানার ভয় করে সে চেষ্টা করে নতুনভাবে উড়াল দেওয়ার এবং তাই নিজের বোকাসোকা ছেলেটিকে পাঠায় খোদার পাথে। বোকাসোকা ইমরান তার পিছিয়ে পড়া চিন্তার জগৎ নিয়ে ছিটকে পড়তে থাকে মা- বাবার কিংবা স্বদেশেরই ঐতিহ্যিক জগৎ থেকে। কালো ছাগলের পিছে ছুটতে ছুটতে সে ঢুকে পড়ে মোল্লাপ্রজাতন্ত্রী পবনকুটির মধ্যে।

শেষ পর্যন্ত ইমরান বুঝতে পারে ইকরহাটি গ্রাম, তার পিতার পুরোনো গ্রামটিই সুন্দর ছিল পবনকুটিরের চেয়ে- যদিও তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। তখন সেই গ্রামে শকুন ঠোকর দিচ্ছে জীবন্ত মানুষেরই মনন আর শরীরে, দলে দলে কালো ছাগল ধেয়ে এসে মুড়ে দিচ্ছে গাছের মাথা এবং একমাত্র জলপাই ছাড়া অন্য কোনো গাছই রেহাই পাচ্ছে না তাদের বুভুক্ষু জিহ্বার স্পর্শ থেকে।

ইমতিয়ার শামিমের এই লেখা প্রতীকী ব্যঞ্জনাময়; অসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য নিতির হিংস্রতা। বিষণ্ণতা এবং নিরুপায়তার আখ্যান। আমাদের সমকালের কথাগুলোই অসম্ভব নিস্পৃহভাবে তিনি বলে উঠেছেন মহাকালের ভাষায়।