শেষের কবিতা

৳ 250.00

শেষের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম রোমান্টিক উপন্যাস । রবীন্দ্রনাথ এটি লেখেন ১৯২৮ সালে ব্যাঙ্গালোরে, স্বাস্থ্য উদ্ধারের প্রয়াসে সেখানে থাকবার সময়ে। ১৩৩৪ বঙ্গাব্দের ভাদ্র থেকে চৈত্র অবধি প্রবাসীতে ধারাবাহিকভাবে রচনাটি প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্রনাথের শেষজীবনে ছবি আঁকার কালে কথাসাহিত্যের চিত্রধর্মে কিছু কিছু নূতনত্ব দেখা গেছে। কলমের স্বল্প আঁচড়ে বক্তব্যকে নিশ্চিতভাবে। চোখের সামগ্রী করে তোলার এক বিশেষ ঝোঁক এবং সেই সঙ্গে দক্ষতা ।

শেষের কবিতার প্রধান চরিত্র বিলেত ফেরত ব্যারিস্টার অমিত রায়; প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত এবং রোমান্টিক যুবক। অমিতের মধ্যে যেটি প্রবল সেটি হলো প্রগলভতা। সেটিই তার ছদ্মবেশ। তর্কে। প্রতিপক্ষকে হারাতে সিদ্ধহস্ত। এই অমিত একবার শিলং পাহাড়ে গেল বেড়াতে। আর সেখানেই এক মোটর-দুর্ঘটনায় পরিচয় ঘটল লাবণ্যর সাথে । যার পরিণতিতে এলো প্রেম। কিন্তু অচিরেই বাস্তববাদী লাবণ্য বুঝতে পারল অমিত একেবারে রোমান্টিক জগতের মানুষ যার সঙ্গে প্রতিদিনের সাংসারিক হিসেব-নিকেশ চলে না। ইতিমধ্যে শিলং-এ হাজির হয় কেতকী। হাতে অমিতের দেওয়া আংটি দেখিয়ে তাকে নিজের বলে দাবী করে সে। ভেঙে যায় লাবণ্য-অমিতের বিবাহ-আয়োজন। শেষপর্যন্ত অমিত স্বীকার করে যে, লাবণ্যের সাথে তাঁর প্রেম যেন ঝরনার জল–প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য নয়; আর কেতকীর সাথে সম্পর্ক ঘড়ায় রাখা জল—প্রতিদিন পানের উদ্দেশ্যে। ব্যক্তি মানুষের মূল্যচেতনার উপাদান যদি অন্তর থেকে শুধুই বার হয়ে আসতে থাকে—যার সমুন্নতি ও দীপ্তি বিদ্যার বৃহৎ পরিমার্জনায়, তারও একটা চরিত্র আছে। বাস্তব চেনাশোনার চলা বাহ্যিক অভিজ্ঞতার জগৎ থেকে তা একেবারে অন্তর অভিমুখী। মূলত শেষের কবিতা বিংশ শতকের বাংলার নবশিক্ষিত অভিজাত সমাজের জীবনকথা ।