শ্রেষ্ঠ কবিতা

View cart “সতত ডানার মানুষ” has been added to your cart.

৳ 400.00

ফরহাদ মজহার এখন কিংবদন্তি। জীবনযাপন, কাজ, কাব্য, সংগীত, নাটক, চিন্তাভাবনা সব মিলিয়েই। কাজ করছেন নীরবে। কৃষি, শিল্প, প্রকৃতি, ভাবান্দোলন, রাজনীতি ইত্যাদি। তিনি আছেন যেখানে তাঁর দরকার –তাঁর দায় ও ভূমিকাসমেতে। ষাট দশকের শেষ থেকে ‘খোকন এবং তার প্রতিপুরুষ’ –এর কবিতাগুলো ছাপা শুরু হবার পর থেকে বাংলা কবিতা আর আগের মতো রইলো না। কাব্যনির্মারণশৈলী বিশেষত বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক অনুষঙ্গ ছিল নিছকই কবিতার বাইরের দিক, আসলে কবি ও কবিতার বেড়ে ওঠা কিংবা কবিতার নিজের ভেতরের লড়াই খোকনের সঙ্গে তার প্রতিপুরুষের একই সঙ্গে একটি জনগোষ্ঠীর বেড়ে ওঠারও সংগ্রাম, একটি রাষ্ট্রেরই ইতিহাস- সেটা ফরহাদ দেখিছেন কবিতা, ভাব এবং ইতিহাসের ত্রিভুজ এঁকে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে তিনি নিরীক্ষণ করলেন অনেক গভীর থেকে। তাঁর শ্রেণির টানাপোড়েন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করলেন। কবিতার এই জ্যামিতি আজ অবধি কেউই আর নতুন করে আঁকতে পারেন না। তারপর এলো লিপ্ত ধারার কবিতা। যেখানে কবিতা সরাসরি রাজনীতি ও ইতিহাস নির্মাণে অংশগ্রহণ করে। যেমন, ‘আমাকে তুমি দাঁড় করিয়ে দিয়েছ বিপ্লবের সামনে। এলো কবিতার সঙ্গে দর্শনের টক্কর দেওয়া। যথা-বৃক্ষ অর্থাৎ মানুষ ও প্রকৃতির ভেদ বিচারের পদ্য। এরপর ঘটল বাংলা কবিতার বড় ঘটনা ‘এবাদতনামা’ । ধর্মতত্ত্বকে তার দৈবী বা আসমানি খোলস খুলে ফেলতে ভেতর থেকে বাধ্য করা। ধর্ম ছাড়া মানুষের ইতিহাস অসম্ভব। মানুষই মানুষের বিদ্যা, নীতি ও বিধানের শর্ত। জ্ঞানরূপে তাকে জানা, ভক্তিরূপে তার উপাসনা বা সালাত আদায় করা এবং করণকর্মে সেই রূপ চর্চা  ছাড়া মানুষের ইতিহাস নাই– ফরহাদ বললেন। এবাদতনামা বাংলার কাব্য ও ভাবান্দোলনের কেন্দ্রবিন্দ্রু হয়ে উঠল। তাঁর শেষ নিরীক্ষার মধ্যে আছে  কবিতার বোনের সঙ্গে আবার। জননী সরস্বতীর গর্ভে বসে নিজের সহোদরার সঙ্গে কিংবা সীমান্তের দুই পাশের ভাই আর বোনের অভিনব কথোপকথন এই কাব্য। সর্বশেষ ক্যামেরাগিরিতে বাংলাভাষাকে দিয়েছেন দিব্যতার স্বাদ; বাংলা কবিতা পেয়েছে অনির্বনীয়তা  প্রকাশে এক বাঙ্গময় দ্যুতি। এখন হাতে নিয়েছেন ‘শিবানী’ বাংলার কৃষিজীবনের ভিতরে পুষ্ট প্রতীক, আদিকাল্প ও প্রণরক্ষার অন্তর্গত অনুপ্রেরণার ইতিহাস –পুরাণের কাব্যিক পুনর্নির্মাণে। … এইসব সতেজ, উজ্জ্বল উদ্ভাসের নক্ষত্রমণ্ডলীর মতো মুঠোভর্তি একটি আয়োজন ফরহাদ মজহারের শ্রেষ্ঠ কবিতা।