সংবিধান সংশোধন সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক শাসন

৳ 700.00

গণতন্ত্র হলো জনগণের সম্মতির শাসন। আর জনগণের সম্মতি অর্জিত হয় অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সাধ্যমে। তবে শুধু নির্বাচনই গণতন্ত্র নয়। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক যাত্রাপথের সূচনা হয় মাত্র। নির্বাচন পরবর্তীকালে নির্বাচিত সরকার গণতান্ত্রিক আচরণ করলে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠিত সহলেই সত্যিকারের গণতন্ত্র কায়েম হয়। আর সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বস্তরে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার চর্চা ও দুর্নীতি রোধ আবশ্যক। এছাড়া সংসদীয় ব্যবস্থাকে অর্থবহ করতে হলে সংসদকে কার্যকর করাও অপরিহার্য।

সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় প্রশাসনের সর্বস্তরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে। শুধু নির্বাচিত কেন্দ্রীয় সরকার গঠিত হলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অপূর্ণ থেকে যায়। আর অপূর্ণ গণতন্ত্র মানুষের কল্যাণ বয়ে আনে না, এমনকি অনেক সময় তা টিকেও থাকে না। দুর্ভাগ্যবশত, স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকারব্যবস্থা গড়েওঠে নি। ফলে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুসংহত হয় নি এবং ত্বরান্বিত হয়নি আর্থ-সামাজিক ‍উন্নয়নও।

সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলর নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতাবদলের রক্ষাকবচ হলেও, বিশেষত রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাসের কারণে আমাদের দেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের সংস্কৃতি গড়ে ওঠে নি। ফলে দাবি ওঠে নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য নির্দলীয় ব্যক্তিদের নিয়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনের। জনদাবির মুখে ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আমাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ব্যবস্থার অধীনে পরপর তিনটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও, আদালতের নির্দেশনার দোহাই নিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ২০১১ সালে আমাদের সংবিধান থেকেও এ ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়। একতরফাভাবে এ সংশোধনীটি পাসের মাধ্যাম একটি মীমাংসিত করে ফেলা হয়, যা আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে এক ভয়াবহ সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে।