বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সংবাদপত্র ও সাংবাদিকের ভূমিকা

৳ 200.00

১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়কালে বঙ্গবন্ধুই ছিলেন বাংলাদেশের মানুষের সর্বাধিক প্রিয় নেতা। লক্ষ লক্ষ মানুষ মূলত বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়েই মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে জীবন বাজি রেখে শত্রুর মুখোমুখি ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমাদের বীরত্বপূর্ণ লড়াই বিফলে যায়নি। জাতীয় চার নেতার আপ্রাণ প্রচেষ্টা ও নির্দেশনা, সেই সঙ্গে বাংলার বীরজনতার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের ফলেই ত্বরান্বিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সংবাদপত্র ও সংবাদকর্মীবৃন্দ। মহান মুক্তিযুদ্ধে যেসব পত্র-পত্রিকা সেদিন আমাদের প্রেরণা জোগাতো সেগুলোর সংখ্যা মোটেই নগণ্য নয়, হয়তো সেদিনের সংবাদপত্রে আজকের দিনের সংবাদপত্রের মতো এত জৌলুস ছিল না, কিন্তু সেসব সংবাদপত্রের বস্তুনিষ্ঠ খবর শুনে আমরা বুকে বল ফিরে পেতাম।

মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির জন্যে তখন বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হত। তেমনি একটি বিষয় ছিল প্রকাশনা। তখন প্রায় নিয়মিত ন্যাপ অফিসে আসতেন কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান, পটুয়া কামরুল হাসান, শিল্পী মোস্তফা আজিজ এবং সাংবাদিক সন্তোষ গুপ্ত। আমি তখন গ্রেনেড হাতে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ঝাঁপিয়ে পড়ার একটি দৃশ্য সম্বলিত মুক্তিযুদ্ধের জয়ের কৌশল নামে একটি বই-এর কভার এঁকে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ। এদেশের নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের অনেক কথাই জানে না। আমরা যদি পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই, তাহলে অবশ্যই আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই আমাদের প্রধান পাথেয়।

বাংলাদেশ এখন বঙ্গবন্ধু-জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করছে। এমন দুটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ : সংবাদপত্র ও সাংবাদিকের ভূমিকা শিরোনামের গ্রন্থটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।

আশা করি নতুন দিনের নতুন প্রজন্ম এই গ্রন্থ পাঠ করে মুক্তিযুদ্ধকালীন সংবাদপত্রের একটি পরিপূর্ণ ধারণা লাভ করতে পারবে।