৳ 200.00
ওই যে, ওই অত বড় দীপ্তিমান প্রখর সূর্য ও মধ্যাহ্ন গগনে এসে পৌঁছলে আহ্নিক গতি অনুযায়ী নিজস্ব নিয়মে কিয়ৎ পরিমাণ হলেও হেলে পড়তে বাধ্য হয়। মানবজীবনও তাই। সূর্যোদয় থেকে অস্তাচলের পথে ঢলে পড়তে পড়তে বয়স পরিক্রমায় কত কিছুরই না সম্মুখীন হতে হয়। তা একেক বাঁকে একেক চেহারা। গড়পড়তা আয়ুর হিসাব যদি হয় তাহলে মানবজীবনেরও সংক্রান্তিকাল এক গভীর অন্তর্নিহিত তাৎপর্যের মুখোমুখি হতে বাধ্য এবং হয়ও। পঁয়তাল্লিশ বছর বয়স থেকেই শুরু হয় নানা ধরনের সংকটাবর্ত। যা একই সঙ্গে যেমন বহুমাত্ৰিক তেমনই বহুকৌণিকও। যার ফলে এই সংকটকে অনুপুঙ্খভাবে বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে সাধারণ পাঠকের কাছে বোধগম্য করে তোলা খুব সহজ কাজ নয়। কমের পক্ষে সহস্রদল বিকশিত সত্য, ঔচিত্য আর যথার্থের এত এত দিক মিনা ফারাহ তাঁর তামসহর অনুসন্ধানী আলো ফেলে এমন নিখুঁতভাবে তুলে এনেছেন দেখে বিস্ময় মানতে হয়। মধ্য বয়সের রস্যময় অলি-গলি খুঁজতে মিনা ফারাহর এমন স্বচ্ছন্দ সহজ-সরল বিচরণ সচরাচর খুবই বিরল দৃষ্ট। লেখকের যেমন পাকা হাত তেমনই তাঁর অতলস্পর্শী গভীর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা। চান্দ্ৰমাসের দুই পক্ষ তো বটেই এছাড়াও আছে অগণন নীহারিকাপুঞ্জ। বিশাল, বিরাট, অনন্ত জীবনপ্রবাহের মধ্যে আজ কত না রকমের স্রোত আদি অতীত থেকে বহমান সেই সব স্রোন্তোধারা। মানুষের মধ্য বয়সে এসে নানান বাঁকে নানান রূপে প্রতিভাত হতে থাকে। যার মধ্যে অধরা মাধুর্যের রূপখানিও জ্বলে ওঠে পূর্ণ মণিজলে। প্রাঞ্জলতা কি ভাষার, কি চিন্তাপ্রবাহের, কি কঠিনেরে সহজ করে দেখার ক্ষেত্রে প্রায় সর্বত্রই সমান লক্ষণীয়। এমনকি কখনও কখনও পরিস্রুত এই মননশীলতা তাঁর নিজস্ব সীমাবদ্ধতাকেও অতিক্রম করে যায়। এ যেন তারই এক উজ্জ্বল ও বিরল দৃষ্টান্ত।