ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল

View cart “নতুন চাঁদ” has been added to your cart.
View cart “প্রাচীন চীনা দর্শন: লাওসি ও কনফুসিয়াস” has been added to your cart.
View cart “উইলিয়াম কেরী জীবন ও সাধনা” has been added to your cart.
View cart “বৈজ্ঞানিক আত্মজীবনী ও অন্যান্য নিবন্ধ” has been added to your cart.
View cart “মুক্তিসংগ্রাম” has been added to your cart.
View cart “যে গল্প লেখা হয়নি” has been added to your cart.

৳ 400.00

বসন্তের এক নিষ্ঠুর ভোরে মুখ ভেঙে রাশেদ দেখতে পায় ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল জুড়ে নেমে এসেছে অন্ধকার-ঘোষিত হয়েছে সামরিক শাসন; তার পাঁচ বছরের মেয়ে মৃদু ইস্কুলে গিয়েছিল, কিন্তু তাকে যেতে দেওয়া হয়নি, মিলিটারিরা রাইফেল উঁচিয়ে তাকে বাধা দেয়, সে এই অদ্ভুত মানুষদের দেখে রাস্তা থেকে চোখ আর বুক ভরে দুঃস্বপ্ন নিয়ে ঘরে ফিরে আসে। রাশেদের হৃদয়ের মতো ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল আর মৃদুর কাজলাদিদি লুপ্ত হয়ে যায় কর্কশ অশ্লীল সামরিক অন্ধকারে। তবে এই প্রথম সামরিক গ্রাসে পড়েনি তার নষ্টভ্রষ্ট দেশটি, রাশেদের বাল্যকাল আর যৌবন নষ্ট হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানি সামরিক গ্রাসে, এখন তার উত্তরাধিকারীর জীবনও পড়ে সামরিক গ্রাসে। রাশেদ জেগে ওঠে এক দূষিত বাস্তবতার মধ্যে, দিকে দিকে সে বুটের শব্দ শুনতে পায়, সে শুনতে পায় একনায়কের চাবুকের শব্দে নাচছে তার মাতৃভূমি, দেখতে পায় তার আত্মার মতো প্রিয় দেশটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে একনায়কের গ্রাসে পড়ে; তবে রাশেদ শুধু এ দৃশ্যই দেখে না-দেখে ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইলের সবুজ দাবাগ্নিদগ্ধ দেশটিকে কেউ ভালোবাসে না, যদিও সম্ভোগ করতে চায় সবাই। রাশেদ দেখতে পায় তার দেশটিকে নষ্ট করে চলছে সামরিক একনায়করা, ভ্রষ্ট করে চলছে রাজনীতিকেরা; এবং প্রতিটি মানুষ হয়ে উঠছে বিপন্ন, একদিন রাশেদও বিপন্ন হয়ে ওঠে ভয়ংকরভাবে, নিজের চোখের সামনে দেখে পুড়ছে ছাই হচ্ছে ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল-পুড়ছে গাছের পাতা, নদী, মেঘ, ধানখেত, লাঙল, সড়ক, গ্রাম, শহর, পুড়ে যাচ্ছে ছাই হয়ে একটি জাতি, পুড়ে যাচ্ছে ছাই হয়ে যাচ্ছে বর্তমান, পুড়ে যাচ্ছে ছাই হয়ে যাচ্ছে ভবিষ্যৎ। হুমায়ুন আজাদ ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল-এ কোনো ব্যক্তির কথা বলেন নি, বলেছেন একটি দেশ ও জাতির কথা, বলেছেন অভিনব রীতিতে, অসামান্য গদ্যে; তিনি উপস্থাপন করেছেন এক মর্মস্পর্শী ভূভাগের বর্তমান, এবং ভবিষ্যৎকেও। ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইলের এ- ভূখণ্ডটি নিয়ে    আগে আর কেউ এমন দুঃসাহসী হননি সত্যকে এমন অকপটে প্রকাশের; হুমায়ুন আজাদ সে-সত্য প্রকাশ করেছেন, রচনা করেছেন এক অভিনব উপন্যাস, যা শৈল্পিক সৌন্দর্যে অতুলনীয়।